Top News

সবচেয়ে প্রাচীন কোন ১০ ভাষা এখনো সগৌরবে টিকে আছে

 

সবচেয়ে প্রাচীন কোন ১০ ভাষা এখনো সগৌরবে টিকে আছে

ভাষা কেবল শব্দের সমষ্টিতে যোগাযোগের একটি মাধ্যম নয়; বরং এটি মানব ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সভ্যতার এক জীবন্ত দলিল। পৃথিবীতে হাজারো ভাষা জন্ম নিয়েছে, আবার সময়ের স্রোতে তা হারিয়েও গেছে। তবে এর মধ্যেও কিছু ভাষা হাজার হাজার বছর পেরিয়ে আজও জীবিত, টিকে আছে কোটি মানুষের মুখে মুখে।

এসব ভাষায় লেখা হয়েছে ধর্মগ্রন্থ, রচিত হয়েছে সাহিত্য, সংরক্ষিত আছে বিজ্ঞানের জ্ঞান আর সভ্যতার স্মৃতিচিহ্ন। প্রাচীন এসব ভাষা কেবল অতীতের সাক্ষ্য নয়, বর্তমানেও সংস্কৃতি, দর্শন ও আধুনিক জ্ঞানের ভান্ডার সমৃদ্ধ করে চলেছে।

বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো ভাষাগুলোর মধ্যে এখনো সগৌরবে টিকে থাকা ভাষার তালিকায় আছে তামিল, সংস্কৃত, হিব্রু, গ্রিক, আরবি, ফারসি থেকে শুরু করে জাপানি পর্যন্ত।

(১)তামিল (পাঁচ হাজার বছরের বেশি পুরোনো)

তামিল ভাষা দ্রাবিড় পরিবারের একটি শাখা। মূলত ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্য ও শ্রীলঙ্কার উত্তরাঞ্চলে এ ভাষার ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। তবে শুধু কথোপকথনের মাধ্যম নয়, সাহিত্যজগতে তামিলের রয়েছে গৌরবময় ইতিহাস। প্রাচীনকাল থেকেই এ ভাষায় লেখা হয়েছে কবিতা, ধর্মগ্রন্থ ও দার্শনিক রচনা, যা আজও সংস্কৃতি ও জ্ঞানের ভান্ডার হিসেবে সমানভাবে মূল্যবান।

(২)সংস্কৃত (পাঁচ হাজার বছরের বেশি পুরোনো)


সংস্কৃতকে প্রায়ই ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে উৎপত্তি হওয়া ভাষাগুলোর জননী বলা হয়। প্রাচীনকাল থেকেই ধর্মীয় অনুষ্ঠান, প্রাচীন সাহিত্য এবং বৈজ্ঞানিক গ্রন্থ বা পাঠ্যবইয়ে সংস্কৃত ভাষার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে।


(৩)গ্রিক (তিন হাজার বছরের বেশি পুরোনো)

মানব ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভাষার একটি গ্রিক। এ ভাষার প্রাচীন লিখিত রূপ ‘লিনিয়ার বি’ (গ্রিক লিপি)। খ্রিষ্টপূর্ব ১৪৫০ থেকে ১৩৫০ সালের মধ্যে এর ব্যবহার হতো। আজকের আধুনিক গ্রিক ভাষা সেই সমৃদ্ধ ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করে রেখেছে এবং ভাষা স্বাভাবিকরূপে বিকশিতও হচ্ছে।


(4)চীনা মান্দারিন (তিন হাজার বছরের পুরোনো)

মান্দারিন চীনা ভাষার লিখিত ইতিহাস তিন হাজার বছরের বেশি পুরোনো। চীনে শাং রাজবংশের আমলে ‘ওরাকল হাড়ে’ খোদাই করা লিপিকে মানব ইতিহাসের প্রাথমিক লিখিত রূপের অন্যতম প্রাচীন প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।

চীনা ভাষা ও লিপির ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেন ইউলিয়াং লিউ। তিনি ও অন্যদের গবেষণায় ওরাকল হাড়ে খোদাই করা অক্ষরের বিকাশের বিবরণ দেওয়া হয়েছে এবং চীনা ভাষার উন্নয়ন বোঝার ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।

(5)হিব্রু (তিন হাজার বছরের বেশি পুরোনো)

হিব্রু হলো একটি প্রাচীন সেমেটিক ভাষা (মূলত মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার অঞ্চলে ব্যবহৃত হয়)। এ ভাষা ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থের সঙ্গে সম্পর্কিত। কথ্য ভাষা হিসেবে হিব্রু একসময় প্রায় বিলুপ্তির মুখে পড়েছিল।

(6)ফারসি (আড়াই হাজার বছরের বেশি পুরোনো)


ফারসি ভাষার ইতিহাস প্রায় আড়াই হাজার বছরের পুরোনো। সাহিত্যে এ ভাষার সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে। জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ রুমি ও হাফিজের মতো কবি-সাহিত্যিকেরা তাঁদের রচনার মধ্যমে ফারসি ভাষাকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। বর্তমানে ইরান, আফগানিস্তান, তাজিকিস্তানসহ ওই অঞ্চলের মানুষ ফারসি ভাষায় কথা বলেন।

(7)লাতিন (২ হাজার ৭০০ বছরের পুরোনো)

রোমান সাম্রাজ্যের ভাষা ছিল লাতিন। রোমান সাম্রাজ্যের বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে লাতিন ভাষা ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। সংস্কৃতের মতো লাতিন ভাষাও অন্যান্য ভাষার ওপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে চলেছে।

বিশেষ করে আধুনিক ইউরোপের অনেক ভাষায় লাতিন ভাষার গভীর ছাপ রয়েছে। ফরাসি, স্প্যানিশ, ইতালীয়সহ কয়েকটি আধুনিক ইউরোপীয় ভাষা লাতিন থেকে উদ্ভূত। যদিও এটিকে এখন আর মাতৃভাষা বলা যায় না। See more ---------------



Post a Comment

Previous Post Next Post